নাম : জগদ্দল মহাবিহার

নাম : জগদ্দল মহাবিহার
যোগাযোগ
ইমেইল:
 naogaon_pourashava@yahoo.com   ফোন: ০২৫৮৭৭৪৭৩২০
Naogaon pourasava web portal

www.naogaonpoura.com
জগদ্দল মহাবিহার


জগদ্দল মহাবিহার (ধামইরহাট উপজেলার,নওগাঁ)



জগদ্দল পাথর প্রবাদটির সঙ্গে আমরা পরিচিত। কিন্তু এ নামের কোনও পাথর বা জায়গা আদতেই আছে কি? এসব তথ্য সরেজমিনে জানতে হলে আপনাকে যেতে হবে নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার জগদ্দল গ্রামে। অল্প খরচে স্বল্প সময়ে বেড়িয়ে আসার বেশ সুন্দর একটি জায়গা ‘জগদ্দল মহাবিহার’।


বাংলার চার শতাব্দীব্যাপী গৌরবময় রাজত্বকাল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল রাজারা তাদের বিশাল সাম্রাজ্যের সর্বত্র বিভিন্ন রকম বৌদ্ধ মন্দির, মঠ ও স্তূপ নির্মাণ করেছিলেন। ধারণা করা হয় রাজা রামপাল প্রায় ৫০টি স্বয়ংসম্পূর্ণ বৃহদায়তন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন। পাল রাজাদের নির্মিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বরেন্দ্র অঞ্চলের সোমপুর মহাবিহার, বিক্রমপুরের বিক্রমপুরী বিহার, মগধের বিশালায়তন বিক্রমশীলা মহাবিহার ও জগদ্দল মহাবিহার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সম্ভবত রাজা ‘রামপাল’ (১০৭৭-১১২০) জগদ্দল মহাবিহার নির্মাণ করেন। নওগাঁ জেলার ধামইরহাট-জয়পুরহাট মহাসড়কের হরতিকডাঙ্গা বাজারের তিন কিলোমিটার উত্তরে, বাংলাদেশ-ভারতের কালুপাড়া সীমান্তের প্রায় ১.৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং ধামইরহাট থানা কার্যালয়ের ৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে এই জগদ্দল মহাবিহারের অবস্থান। এ স্থান থেকে পাহাড়পুর ও হলুদ বিহার বৌদ্ধ মন্দিরের দূরত্ব ২৭কিলোমিটারেরমধ্যে।


যেসব প্রত্ন বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর ১৯৮৩-৮৪ সালে এ এলাকায় প্রাথমিক জরিপ করে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে জগদ্দল গ্রামের বিশাল ঢিবিতে এক সংক্ষিপ্ত খননকার্য চালানো হয়। এ সময় এখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ প্রতœবস্তু উৎকীর্ণ লিপিযুক্ত দুটি পাথরের স্তম্ভ, যা এ প্রতœস্থলের সময়কাল নির্ধারণে সহায়তা করে। এর একটি পাওয়া গেছে বিহারের পূর্বদিকের প্রবেশ পথের কাছে, অন্যটি দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে। পূর্বদিকের প্রবেশপথের কাছে প্রাপ্ত প্রথম স্তম্ভটির অষ্টকোণ দণ্ডের গায়ে দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শাসকের প্রাচীন বাংলা হরফে এর লিপিকার গঙ্গাপুরের শ্রী মক্কড় নন্দীর নাম উৎকীর্ণ আছে। মন্দিরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে প্রাপ্ত প্রস্তুর-স্তম্ভটি এখনও উৎখান-খাদে অর্ধপ্রোথিত রয়েছে। এটিতেও একই সময়ের প্রাচীন বাংলা লিপিতে উৎকীর্ণ রয়েছে লিপিকার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত জনৈক শ্রী ভবদাসের নাম। শ্রী মক্কড় নন্দী ও শ্রী ভবদাস উভয়েই ছিলেন লিপিকার সম্প্রদায়ের লোক এবং সম্ভবত জগদ্দল কিংবা এর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা। এখান থেকে ১৫০টিরও বেশি শিল্প নিদর্শন ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রী পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে রয়েছে শিলালিপি, অলংকৃত ইট, মাটির তৈরি বিভিন্ন রকম পাত্র, পোড়ামাটির ফলক ও পোড়ামাটির তৈরি মানুষের মাথা, জপমালার পুঁতি, লোহার পেরেক, মসৃণ ও কর্তিত প্রস্তুরখণ্ড, প্রস্তুর-মূর্তি, একটি স্বর্ণপিণ্ড ইত্যাদি। তাছাড়া পশ্চিম দেয়ালের বাইরের অংশের অলংকরণ হিসেবে ব্যবহƒত অনেকগুলো ফলক অবিকৃত অবস্থায় যথাস্থানে পাওয়া গেছে। এ ফলকগুলোতে হরিণ, পাখি, ধনুর্বিদ, দ্বাররক্ষী প্রভৃতির মূর্তি উৎকীর্ণ রয়েছে। এখানে প্রাপ্ত অলংকৃত ইটে রয়েছে পদ্মপাপড়ি, শিকল ও আঁকবাঁকা সর্পিল নকশা।


কীকীদেখবেনরাস্তা থেকে মাটির ঢিবিটি দেখে বোঝার উপায় নেই, এটিই একসময়কার প্রবল পরাক্রমশালী পাল সাম্রাজ্যের স্থাপত্যকলার এক অপূর্ব নিদর্শন। জগদ্দল বিহারটি বর্গকার, চারপাশের সমতল ভূমি থেকে এর গড় উচ্চতা ৫.৫ মিটার। ঢিবিটির মধ্যস্থলে রয়েছে একটি খাদ। এ বিহারে আছে সারি সারি আয়তকার কুঠুরি। এগুলোর প্রত্যেকটির পরিমাপ ৩.৫ী৩.৩ মিটার। এগুলো পাহাড়পুর বিহারের পূর্বদিকের পার্শ্ব-ইমারতের কক্ষগুলোর অনুরূপ, এ বিহারের কোণায় একটি বৃত্তাকার কুঠুরিও আছে। ঠিক মাঝ খানটায় ছিল মূল উপাসনালয়। এছাড়া জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নানা রকমের পাথরের কলাম। কোনোটি সম্পূর্ণ, কোনোটি অসম্পূর্ণ। সুন্দর কারুকার্যময় দরজার খিলান, প্রাচীন লিপি খোদাইকৃত কলাম, অর্ধসম্পূর্ণ মূর্তি দেখে মনে হবে যেন এক সমৃদ্ধ জনপদের লোকজন সবাই কাজকর্ম ফেলে রেখে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে। মূল বিহারটির আশপাশে আরও কিছু ঢিবি চোখে পড়ে; কিন্তু ওগুলো এখনও খননের অপেক্ষায় অযতেœ পড়ে আছে। একটু কষ্ট করে জগদ্দল বিহারের পাশে জগৎনগর গ্রামে গেলে দেখতে পাবেন সারি সারি তালগাছ ও বাঁশ ঝাড়ে ঘেরা ‘পাকুরা’ ও ‘দিগমপাড়া’ নামের সাত একর ও আট একর আয়তনের বিশাল দুটি পুকুর। আরও চাইলে দেখে আসতে পাড়েন জগদ্দল গ্রামে অবস্থিত দেশের হাতে গোনা কয়েকটি আদিবাসী স্কুল এন্ড কলেজের একটি জগদ্দল আদিবাসী স্কুল এন্ড কলেজ; দেখে আসতে পারেন কালুপাড়া সীমান্তে ব্রিটিশদের স্থাপন করা সীমান্ত পিলার ও ভারতের তার কাটার বেড়া। হাতে সময় থাকলে জগদ্দল বিহারের আশপাশের গ্রাম ও সাঁওতাল পল্লীগুলোও ঘুরে আসতে পারেন। গ্রামগুলোতে দেখতে পাবেন গ্রামবাসীর মাটির দোতালা বাড়ি যা দেশের আর কোথাও তেমন দেখতে পাবেন না। মাটিকে সিমেন্ট আর বাঁশ ও তালগাছকে রড হিসেবে ব্যবহার করে বানানো এ বাড়িগুলো শীত-গ্রীষ্ম সবসময়ই বেশ আরামদায়ক। তাছাড়া বিশাল বিশাল মহীরূহে ছাওয়া ঠাণ্ডা সুশীতল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও গ্রামের মানুষদের সহজ-সরল জীবন দেখে আপনি মুহূর্তের জন্য হলেও এক মায়াময় পরিবেশে হারিয়ে যাবেন।


যাতায়াতওথাকা-খাওয়াজগদ্দল মহাবিহারটি দেখতে হলে ঢাকা থেকে আপনাকে যেতে হবে নওগাঁ জেলার ধামইরহাটে। ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে প্রতিদিন ধামইরহাটের উদ্দেশে বাস ছাড়ে। ধামইরহাট থেকে ভ্যানযোগে আপনাকে যেতে হবে জগদ্দল ।



তথ্য সূত্রঃ বিভিন্ন প্রকাশিত তথ্য হতে সংগ্রহ


নিয়মিত পৌর কর পরিশোধ করুন ।। নিয়মিত পানির বিল পরিশোধ করুন।। আপনার শিশুকে স্কুলে পাঠান।।ট্রাফিক আইন মেনে চলুন||শহর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে সহযোগিতা করুন।। ড্রেনে আবর্জনা ফেলা থেকে বিরত থাকুন।। আবর্জনা ডাষ্টবিনে ফেলুন।। পানির বিল নিয়মিত পরিশোধ করুন।। পানির অপচয় রোধ করুন।। আপনার শিশুকে সঠিক সময়ে টিকা দিন।।জন্ম -মৃত্যু পৌর রেজিষ্টারে (অন-লাইনে লিপিবদ্ধ করে সনদ গ্রহন করুন।।গাছ লাগার পরিবেশ বাচান।।অবকাঠামো নির্মানের পূর্বে পৌরসভার অনুমতি নিন।।যে কোন নির্মান কাজের পূর্বে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত মহা পরিকল্পনা (মাষ্টার প্লান)অনুসারে করুন।।যে কোন তথ্য জন্য পৌর ডিজিটাল সেন্টারে যোগাযোগ করুন।। তামাককে না বলুন।